Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

এক নজরে

আশুগঞ্জ উপজেলা বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার অন্তর্গত একটি প্রশাসনিক এলাকা ও গুরুত্বপূর্ণ শহর। এটি মেঘনা নদীর বদ্বীপ। এর ঊর্ধ্বতা হল ১০ মিটার (৩৬ ফুট)।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন] শহরটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য অতি পরিচিত। বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিদ্যুত উৎপাদন কেন্দ্র হলো আশুগঞ্জ। মেঘনা নদীর তীরে অবস্থিত আশুগঞ্জ বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপজেলা। ঢাকা থেকে ৯০ কিলোমিটার ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর থেকে ২৪ কিলোমিটার দুরত্বের মাঝামাঝি স্থানে এ উপজেলার অবস্থান।

আশুগঞ্জ বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্পনগরী, নদীবন্দর ও বাণিজ্য শহর। জাতীয় অর্থনীতিতে আশুগঞ্জ অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। এখানে দেশের বেশ কয়েকটি উল্লে­খযোগ্য স্থাপনা তথা শিল্প প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ভারী শিল্প ছাড়াও আশুগঞ্জ বাংলাদেশের অন্যতম বাণিজ্য শহর হিসেবে দেশে-বিদেশে ব্যাপক পরিচিত। ব্রিটিশ শাসনামলে পাটের বড় বাজার হিসেবে আশুগঞ্জের পরিচিতি ছিল। তখন ইংরেজদের পাট ক্রয় কেন্দ্র আশুগঞ্জ ছিল বিধায় তাদের পদচারণায় মুখরিত ছিল আশুগঞ্জ। আশুগঞ্জের পাট সেসময় ইংল্যান্ডের শিল্পনগরী ডান্ডিতে রপ্তানি হতো। বর্তমানে ধান ও চাউলের ব্যবসার জন্য আশুগঞ্জ ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছে। পাশাপাশি লালপুরের শুটকি শিল্প দেশের ব্যবসা- বাণিজ্যে উল্লেখযোগ্য স্থান করে নিয়েছে। আশুগঞ্জে ছোট-বড় চার শতাধিক চাতাল ও অটো রাইস মিল রয়েছে। ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণেই আশুগন্জে ধান-চাউলের এ বিশাল বাজার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তাছাড়া দেশের অন্যতম বৃহৎ সেচ প্রকল্প ‘‘আশুগঞ্জ সবুজ প্রকল্প’’ এখানে অবস্থিত। ভারতীয় ট্রানজিটের নৌবন্দর হিসেবে আশুগঞ্জকে ব্যবহারের জন্য ভারতীয় উদ্যোগ বাস্তবায়িত হলে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে আশুগঞ্জের গুরুত্ব আরো অনেক বৃদ্ধি পাবে।

অবস্থান ও আয়তন

আশুগঞ্জ উপজেলার আয়তন ৬৭.৫৯ বর্গ কিলোমিটার (১৬,৭০২ একর)। এটি আয়তনের দিক থেকে চট্টগ্রাম বিভাগের সবচেয়ে ছোট উপজেলা।[১] ভৌগোলিক অবস্থান :আশুগঞ্জ উপজেলাটি ২৩°৫১´- ২৪°৬´ উত্তর অক্ষাংশ থেকে ৯০°৫৩´- ৯১°১৯´ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত। এ উপজেলার উত্তরে সরাইল উপজেলা, দক্ষিণে নবীনগর উপজেলা, পূর্বে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা, পশ্চিমে কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব উপজেলানরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলা

ইতিহাস

মহাভারত প্রণেতা বেদব্যাসের পদ্ম পুরাণ গ্রন্থে ও জনশ্রুতিতে যে কালিদহ সায়র এর উল্লেখ পাওয়া যায় সেই কালিদহ সায়রের তলদেশ থেকে ধীরে ধীরে স্থল ও জনপদে পরিণত হয় আশুগঞ্জ।[তথ্যসূত্র প্রয়োজন]১৮৯৮ খৃস্টাব্দে আশুগঞ্জ বাজারের গোড়াপত্তন হয় বলে জানা যায়। আশুগঞ্জ প্রতিষ্ঠার পূর্বে এই এলাকার লোকজন পার্শ্ববর্তী ভৈরববাজারে ক্রয়-বিক্রয় তথা ব্যবসা করতেন । ভৈরববাজারের মালিক ভৈরব বাবু কর্তৃক আরোপিত অত্যধিক করভারে জর্জরিত হয়ে মেঘনার পূর্ব পাড়ের ক্রেতা-বিক্রেতারা সোনারামপুর মাঠের উপর হাট বসায়। তৎকালীন সরাইল পরগনার জমিদার কাশিম বাজারের মহারাজা আশুতোষ নাথ রায় আশাব্যঞ্জক এ সংবাদ জানতে পেরে তিনি উদ্যোক্তাদের ডেকে পাঠান। উদ্যোক্তাগণ মহারাজার ডাকে সাড়া দিয়ে নিজেদের দুর্গতির অবসানের জন্য মহারাজার নামের সাথে মিল রেখে ঐ হাটকে ‘‘আশুগঞ্জ’’ নামকরণ করেন। সময়ের ব্যবধানে ইংরেজরা এখানে অসংখ্য পাটকল স্থাপন করে এবং অচিরেই আশুগঞ্জ দেশ-বিদেশে পরিচিত হয়ে ওঠে । পরবর্তীতে ২০০০ সালের ২৫ জুলাই ৭ টি ইউনিয়ন নিয়ে আশুগঞ্জ উপজেলা বাস্তবায়িত হয়।

নামকরণ

আশ ও গঞ্জ শব্দ হতে আশুগঞ্জ নামকরণের উদ্ভব। আশু শব্দের অর্থ আউশ ধান। এটি বর্ষাকালে উৎপন্ন হয়। গঞ্জ শব্দের অর্থ নদীর তীরে প্রতিষ্ঠিত বাণিজ্য কেন্দ্র বা হাট-বাজার বা লোকালয়। মেঘনা ও তিতাস নদীর তীরে জেগে উঠা এ চরটি একসময় আউশ ধান উৎপাদনের জন্যে বিখ্যাত ছিল। মেঘনা নদীর তীরে আউশ ধান ক্রয় বিক্রয়কে কেন্দ্র করে একটি গঞ্জ গড়ে উঠেছিল। তাই এলাকাটির নাম হয় আশুগঞ্জ। [২]


প্রতিষ্ঠাকাল

১৯৮৪ সালের ২৮ নভেম্বর আশুগঞ্জ থানা প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ২০০০ সালের ২৩ অক্টোবর আশুগঞ্জ থানাকে উপজেলায় উন্নীত করা হয়।

প্রশাসনিক এলাকা

আশুগঞ্জ উপজেলায় বর্তমানে ৮টি ইউনিয়ন রয়েছে। সম্পূর্ণ উপজেলার প্রশাসনিক কার্যক্রম আশুগঞ্জ থানার আওতাধীন।

ইউনিয়নসমূহ:

জনসংখ্যার উপাত্ত

২০১১ সালের আদমশুমারি অনুসারে আশুগঞ্জ উপজেলার মোট জনসংখ্যা ১,৮০,৬৫৪ জন। এর মধ্যে পুরুষ ৮৮,৩৪০ জন এবং মহিলা ৯২,৩১৪ জন। মোট পরিবার ৩৩,৫৫২টি।[১] জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ২,৬৭৩ জন।[৩]

শিক্ষা ব্যবস্থা

২০১১ সালের আদমশুমারি অনুযায়ী আশুগঞ্জ উপজেলার সাক্ষরতার হার ৫১.২%।[১] প্রাথমিক শিক্ষায় আশুগঞ্জের সবচেয়ে প্রাচীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হলো আড়াইসিধা উত্তর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এটি ১৯১৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। মাধ্যমিক শিক্ষায় আশুগঞ্জের সবচেয়ে প্রাচীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হলো আশুগঞ্জ আঞ্জুমানিয়া ইসলামিয়া হাই স্কুল,তালশহর যা বর্তমানে তালশহর এ.এ.আই উচ্চ বিদ্যালয় নামে পরিচিত। ১৯৪০ সালে স্কুলটি প্রতিষ্ঠিত হয় । ১৯৬৯ সালে স্থাপিত তারুয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় উপজেলার প্রথম নারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। মাদ্রাসা শিক্ষায় উপজেলার প্রথম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হলো আড়াইসিধা আলিয়া মাদ্রাসা।১৯৩৬ সালে এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৯২ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর আশুগঞ্জ উপজেলা সদরে প্রতিষ্ঠিত হয় ফিরোজ মিয়া সরকারি কলেজ। কলেজটিতে উচ্চমাধ্যমিকের পাশাপাশি উচ্চ মাধ্যমিক ব্যবসায় ব্যবস্থাপনা,ডিগ্রি পাস কোর্স,৫টি বিষয়ে অনার্স কোর্স চালু রয়েছে। ১৯৬৩ সালে আশুগঞ্জ বন্দরে প্রতিষ্ঠিত সরকারি হাজী আব্দুল জলিল উচ্চ বিদ্যালয় উপজেলার মাধ্যমিক শিক্ষার একমাত্র সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।এখানে রয়েছে -

  • কলেজ-৫ টি

(অনার্স-১টি,ডিগ্রি-১টি,উচ্চমাধ্যমিক-২,কারিগরি-১)

  • উচ্চবিদ্যালয়-১৬ টি

(বালিকা বিদ্যালয়-৩টি,সহ-শিক্ষা:১৩টি)

  • মাদ্রাসা-৫ টি

(দাখিল-২টি,আলিম-১টি,ফাজিল-১টি,কামিল-১টি)

  • প্রাথমিক বিদ্যালয়-১১৭ টি

(সরকারি-৪৯টি,বেসরকারি-৬৮টি)

যোগাযোগ ব্যবস্থা

  • সড়ক পথঃ ২৯৮.০৫ কিলোমিটার
  • নৌ-পথঃ ১৪ কিলোমিটার
  • রেল পথঃ ০৭ কিলোমিটার।

উল্লেখযোগ্য ব্যক্তি

উল্লেখযোগ্য স্থান ও স্থাপনা

  • আশুগঞ্জ সারকারখানা কোম্পানী লিমিটেড
  • আশুগঞ্জ পাওয়ার স্টেশন কোম্পানী লিমিটেড
  • গ্যাস ট্রান্সমিশন কোম্পানী লিমিটেড
  • আশুগঞ্জ খাদ্য গুদাম সাইলো
  • শহীদ আবদুল হালিম রেলওয়ে সেতু
  • রাষ্ট্রপতি মোঃ জিল্লুর রহমান ২য় রেলওয়ে সেতু
  • সৈয়দ নজরুল ইসলাম সড়ক সেতু
  • ভাস্কর্য‘জাগ্রত বাংলা’ সারকারখানা গেইট।
  • মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধ.পাওয়ার স্টেশন গেইট।
  • সম্মুখ সমর,নাটাল মাঠ,আশুগন্জ।
  • বঙ্গবন্ধু মুরাল,কাচারী বিথীকা,আশুগঞ্জ বাজার।
  • ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের মুরাল,ফিরোজ মিয়া সরকারি কলেজ, আশুগঞ্জ।
  • দৃষ্টিনন্দন শহীদ মিনার,ফিরোজ মিয়া সরকারি কলেজ, আশুগঞ্জ
  • মেঘনা নদী ও চরসোনারামপুর নান্দনিক দৃশ্য

বিবিধ

হাট-বাজার ও মেলা

  • ক) আশুগঞ্জ সাপ্তাহিক হাট- বুধবার
  • খ) তালশহর সাপ্তাহিক হাট- সোমবার, শুক্রবার
  • গ) লালপুর সাপ্তাহিক হাট- মঙ্গলবার

মেলা

  • বিজয় মেলা,আশুগঞ্জ
  • বৈশাখী মেলা,আশুগঞ্জ
  • উন্নয়ন মেলা,আশুগঞ্জ